সাইকেল কেনার ১০ টি টিপস

সাইকেল কেনার ১০ টি টিপস

সাইকেল ছেলে ও মেয়ে উভয়েরই একটি পছন্দের ব্যক্তিগত যানবাহন। বিশেষ করে স্টুডেন্ট ও যারা অল্প দুরত্বের গন্ত্বব্য নিয়মিত গমন করে থাকেন তাদের জন্য খুবই উপযোগী। এছাড়াও যারা যারা নিয়মিত সময় স্বল্পতার কারণে শারিরীক এক্সারসাইজ করতে পারেন না তারা এখন নিজেদের যাতায়াতের সময় কিছুটা ব্যায়াম সেরে ফেলতে বাইসাইকেলের দিকে ঝুকে পরছেন। এই তো গেলো বাইসাইকেলের কিছু উপকারী দিক তবে সমস্যা হলো অনেকেই এই বাইসাইকেল কিনতে গিয়ে কিছুটা বিপাকে পরে যান। কারণ বাজারে এখন বাইসাইকেল প্রচুর বিকল্প থাকায় অনেককেই এটি কিনতে গিয়ে কিছুটা বিরম্বনায় পড়তে হয়। তাই চলুন এই বিরম্বনা থেকে কিছুটা হলেও বাচার জন্য সাইকেল কেনার ১০ টি টিপস সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

১। কাদের জন্য কিনবেন?

বাই সাইকেল কেনার আগে অবশ্যই পূর্বেই নির্বাচন করতে হবে যে সাইকেলটি কাদের জন্য আ কিসের জন্য ক্রর‍্য করা হচ্ছে? বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে সাধারনত তিন টি শ্রেনিতে সাইকেল ক্রয় করা হয়। শিশুদের জন্য সাইকেল, ছেলেদের জন্য, লেডিসের জন্য/ বালিকার জন্য। কারণ এদের প্রত্যেক্র জন্য আলাদা ভাবে বাইসাইকেল প্রস্তুত করা হয়। প্রত্যেক ধরনের সাইকেলের ডিজানের মধ্যে যেমন ভিন্নতা রয়েছে তেমন ভিন্নতা রয়েছে বাই সাইকেলের দামের।

২। প্রয়োজনীয়তা

আপনি হয়ত মনে করতে পারেন, একটি বাইসাইকেলই তো কিনবো এতে আবার কি প্রয়োজন বা কি প্রয়োজন নাই তা নিয়ে চিন্তার করার দরকার কি। এই ধারণাটা আপনার তখনই পাল্টে যাবে যখন আপনি একটি সাইকেলের দোকানে যাবেন তখন তাদের সাজেশন ও ভ্যারিয়েন্ট শোনাটা বিরক্তিকর মনে হবে। তাই এটাই সবচেয়ে ভালো আপনার ঠিক কি জন্য সাইকেল প্রয়োজন তা তাদেরকে বলুন তারাই আপনাকে সঠিকটা প্রেফার করে দিবে। এছাড়াও সাইকেলের ট্রায়ার কেমন প্রয়োজন, ব্রেক কোন ধরনের দরকার, তারপর গিয়ার সহ নাকি গিয়ার ছাড়া ইত্যাদি বিষয়গুলো তাদেরকে খুলে বলুন না হয়ত নিজে নিজে চিন্তা করে সাইকেলের স্পেসিফিকেশনের সাথে মিলিয়ে সিউর হয়ে নিন।

৩। সাইকেলের আকৃতি

আপনি যদি সাইকেলে সবোর্চ্চ কমফ্রট চেয়ে থাকেন তাহেল আপনাকে আপনার বডির সাথে তুলনা করে সেই অনুযায়ী মানানসই একটি সাইকেল ক্রয় করতে হবে। আপনার বডির তুলনায় যদি খুব বেশি বড় বা খুব বেশি ছোট সাইকেল ক্রয় করে ফেলেন তাহলে কিন্তু সেটা আরো যন্ত্রণার কারণ হবে।

৪। টেস্ট ড্রাইভ

যেই সাইকেলই ক্রয় করেন না কেন অবশ্যই সেটার একটা টেস্ট ড্রাইভ দিয়ে নিবেন। কারণ টেস্ট ড্রাইভ দিলে আপনি নিজেই বুজতে পারবেন আসলে আপনি যেমনটা চাচ্ছেন ঠিক তেমনটাই পাচ্ছেন নাকি।

৫। ব্রেকিং সিস্টেম

প্রত্যেক শ্রেণীর যানবাহনের জন্য ব্রেক একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।ব্রেক ছাড়া কোন যানবাহন চলতে পারে না। ঠিক বাই সাইকেলেরও এর বিকল্প নয়। সাইকেল কেনার আগে এর ব্রেক সিস্টেম নিয়েও ভেবে দেখতে হবে। বর্তমানে সাইকেলের সাথে ৩ ধরনের ব্রেক সিস্টেম পাওয়া যায়। ব্রেকিং সিটেম গুলো হচ্ছে ডিস্ক ব্রেক, ওয়েল ব্রেক এবং ভি-টাইপ ব্রেক। এই তিন ধরনের ব্রেকের মধ্যে যেকন একটি সিস্টেম আপনি পছন্দ করে নিতে পারেন।

৬। বডি ম্যাটারিয়ালস

বাই সাইকেলের জন্য বডি ম্যাটারিয়ালস একটি গুরুত্ব পূর্ণ দিক। এই বডির উপরে সাইকেলের অনেক কিছু নির্ভর করে যেমন, সাইকেলের দাম, ওজন, স্থায়ীত্ব, আকৃতি। এখন বাংলাদেশের বাজারে দুই ধরনের বডি ম্যাটারিয়ালস এর সাইকেল পাওয়া যায় যেমন স্টিল বডি সাইকেল ও অ্যালুমিনিয়ামের বডি সাইকেল। স্টিল বডি সাইকেলের দাম কিছুটা কম হলেও এর স্থায়ীত্বকাল অনেক বেশি এবং ওজনে ভারি হয়ে থাকে। আর আল্যুমিনিয়াম বডি বাইসাইকেলের দাম তুলনামূক কিছুটা বেশি, এটি ওজনে হালকা হয় । তাই সাইকেল কেনার আগে সাইকেলের দাম ও বডি ম্যাটারিয়ালস সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে।

ব্র্যান্ড ল্যাপটপের দাম সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

৭। সাপোর্ট বা মাড গার্ড

সকল ধরনের বাই সাইকেলের মাড গার্ড সাপর্তিং সিস্টেমের প্রয়োজন পরে নাহ। কেবল মাত্র শিশুদের জন্য সাপোর্ট সিস্টেম সাইকেলের প্রয়োজন পরে। শিশুরা যাতে সাইকেল রাইড করার সময় পরে না যায় সে জন্য বেবি বাইসাইকেলে মাড গার্ড ব্যবহার করা হয়। মাড গার্ড বা সাপোর্টিং সিস্টেমের জন্য বেবি বাই সাইকেলের দাম কিছুটা বেশি হতে পারে।

৮। ব্র্যান্ড সিলেকশন

বাংলাদেশের মধ্যে অনেক ব্র্যান্ডের সাইকেলের পাওয়া যায়। এর মধ্যে জনপ্রিয় কিছু ব্র্যান্ড হচ্ছে দুরন্ত বাইসাইকেল, ফনিক্স বাইসাইকেল, ফক্সটার বাই সাইকেল, কোর বাই সাইকেল, হিরো বাইসাইকেল, ভেলোস বাইসাইকেল, ভয়েজার স্পোর্টস বাইসাইকেল ছাড়াও আরো অনেক নামি দামি ব্র্যান্ড রয়েছে। ব্যাক্তি গত অভিমত হচ্ছে যে দুরন্ত বাইসাইকেলের দাম, ফনিক্স বাইসাইকেল এর দাম, হিরোবাই সাইকেলের দাম ও ভেলোস বাইসাইকেল এর দাম বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে জেনে ধারণা নিয়ে ক্রয় করবেন। ব্র্যান্ডের উপরে সাইকেলের দাম কম বা বেশি হতে পারে।

৯। সাইকেলের চাকা

চাকা মুলত সাইকেলের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে। এখন দুই ধরনের চাকা দেখতে পাওয়া যায় একটি হচ্ছে ইয়াক হুইল সিস্টেম অন্যটি হচ্ছে স্পোক হুইল সিস্টেম। ক্রেতার পছন্দের উপরে নির্ভর করবে কোন ধরনের চাকার সাইকেল কিনবেন? ব্যবহারকারী তার প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোন সময় সাইকেলের চাক্কা পরিবর্তন করতে পারবেন।

১০। বাজেট

একটি বাইসাইকেল খুব বেশি দামী যানবাহন তা কিন্তু নয়। কিন্তু সাইকেলের দামের প্রচুর ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে বাজারে। তাই আপনাকে আপনার বাজেটটি পুরোপুরি নিশ্চিত হয়েই এটি ক্রয় করার কথা চিন্তা করতে হবে। আপনার বাজেট যদি হয় ৫-৭ হাজার টাকা তাহলে ৫-৭ হাজার টাকার মধ্যে সাইকেল নির্বাচন করুণ এবং যদি বাজেট বেশি ১০ থেকে ১৫ টাকা হয় তাহলে ১০-১৫ হাজার টাকা দাম এর সাইকেল নির্বাচন করুন। তবে বেশির ভাগ সময়ই আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী এটির বাজেট অনেকাংশে নির্ভর করে।

বিঃদ্রঃ উপরোক্ত সাইকেল কেনার ১০ টি টিপস জানা থাকলে সহজেই একটি ভালো মানের বাই সাইকেল ক্রয় করতে পারবেন। ভাল মানের বাইসাইকেলের পাশাপাশি কম দামে ভাল সাইকেল নির্বাচন করা সহজ হবে। আশা করছি উপরোক্ত লিখাটি আপনাদের সাইকেল কেনার ক্ষেত্রে ভালো সহায়ক হবে।

By tech

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!