একাউন্টিং সফটওয়্যার

একাউন্টিং সফটওয়্যার

একাউন্টিং সফটওয়্যার সফটওয়্যার হচ্ছে যা দৈনন্দিন ব্যবসায়ীক কাজকে আরো সহজ ও কম সময়ের মধ্যে করে দিতে পারে। যার ফলে আমাদের কোনো কাজ করতে অনেক কম সময় লাগে ও দক্ষতার সাথে কাজ শেষ করতে পারি। এ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার বলতে বুঝায় যে সফটওয়্যারের মাধ্যমে কোনো প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেনের হিসেব খুব সহজে ও নির্ভুলভাবে করতে পারা যায়। যেমনঃ কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রতিদিন কত টাকা আয় বা খরচ হয় তা আমরা নিমিষেই এ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে করতে পারি। তাই আজকে এই লেখার মাধ্যমে আমরা জানবো একাউন্টিং সফটওয়্যার কেন সেরা?

 

অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যারের গুরুত্ব

দৈনন্দিন ব্যবসায়ীক কাজ সহজ করার জন্য এই সফটওয়্যারের গুরুত্ব অনেক। যেকোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য আর্থিক দিকটি বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরী। আর এই সফটওয়্যারের দ্বারা আর্থিক লেনদেনের হিসেব রাখা খুব সহজ। আর্থিক লেনদেনের সব কিছুই এ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যারের মধ্যে লিপিবদ্ধ করা থাকে। ফলে আয় বা খরচ থেকে শুরু করে , ক্রয়-বিক্রয়, পাওনাদারকে কত টাকা দেওয়া হয়েছে, দেনাদারের কাছে কত টাকা আদায় করা হয়েছে, যেকোনো পণ্যের ষ্টক কি পরিমানে আছে তা সম্পর্কে দ্রুত জানা যায় এবং বছর শেষে প্রতিষ্ঠানের লাভ বা ক্ষতি নির্ভুলভাবে হিসেব করা যায়। এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের কাজ এ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে করা যায়।

 

একাউন্টিং সফটওয়্যারের প্রকারভেদ

বিভিন্ন ধরনের এ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার আছে। যেমনঃ এডভান্সড একাউন্টিং সফটওয়্যার , সিঙ্গেল একাউন্টিং সফটওয়্যার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল একাউন্টিং সফটওয়্যার, দুই-তরফা একাউন্টিং সফটওয়্যার।

এডভান্সড একাউন্টিং সফটওয়্যার

এডভান্সড আকাউন্টিং সফটওয়্যার বর্তমানে খুব জনপ্রিয় একটি একাউন্টিং সফটওয়্যার। প্রতিদিনের ব্যবসার হিসেব খুব সহজেই এই সফটওয়্যারের সাহায্যে করতে পারি। এটির মাধ্যমে দ্রুত ইনভয়েস তৈরি করা, প্রতিদিনের আয়-ব্যায়ের হিসেব, ব্যাংকের সাথে লেনদেনের রিপোর্ট তৈরি, বারকোড স্ক্যানের মাধ্যমে বিল পরিশোধ, কাস্টমার এবং সাপ্লায়ারের লেজার ইত্যাদি অনেক কাজ করা যায়।

একাউন্টিং ইনভেনটরি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার

ইনভেনটরি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারকে স্টক ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার ও বলা হয়। একাউন্টিং এর এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে পণ্যের অর্ডারের পরিমান, কি পরিমান পণ্য বিক্রি করা হয়েছে, বিক্রি করার পরে পণ্যের স্টক সম্পর্কে জানা যায়। এর ফলে পণ্যের ইনভেনটরি সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারনা পাওয়া যায়। সব ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে পারবে।

পেরোল এ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার

পেরোল এ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার মূলত এ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার পেরোল সিস্টেম ইন্ট্রিগ্রেড করে তৈরি করা হয়েছে। এ্যাকাউন্টিং পেরোল সফটওয়্যারটি হিসেব নিকাশের পাশপাশি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের হিসেব ঠিক রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটির দ্বারা কর্মচারীদের বেতনের হিসেব, কর্মচারীদের আসার ও যাওয়ার সময়, ট্যাক্সের হিসেব, বোনাসের হিসেবসহ সকল ধরনের কাজ করা যায়।

দুই-তরফা দাখিলা একাউন্টিং সফটওয়্যার

বিঙ্গানসম্মত ও নির্ভরযোগ্য একটি সফটওয়্যার হলো দুই-তরফা দাখিলা পদ্ধতির হিসেব নিকাশের সফটওয়্যার। এখানে দুটি পক্ষ থাকবে এক পক্ষ সুবিধা গ্রহণ করবে আর এক পক্ষ সুবিধা প্রদান করবে। এই পদ্ধতিতে ডেবিটের এ্যামাউন্ট ও ক্রেডিটের এ্যামাউন্ট সমান হয়। যে একাউন্টিং সফটওয়্যারে দুই-তরফা দাখিলা পদ্ধতিতে হিসেব করা হয় তাকে ডাবল এন্ট্রি একাউন্টিং সফটওয়্যার বলে। ডাবল এন্ট্রি একাউন্টিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে লেনদেনের হিসেব নির্ভূল ভাবে করা, লাভ-ক্ষতির হিসেব করা, হিসাবের গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই করা, বছরের শেষে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা বিশ্লেষণ করা ছাড়াও আরো অনেক জটিল সমস্যার সমাধান সহজে করা যায়।

ইআরপি(এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্লানিং) এ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার

ইআরপি বর্তমানে অনেক জনপ্রিয় একটি সফটওয়্যার। সফটওয়্যারটি এ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার যুক্ত করে ব্যবহার করা যায়। ইআরপি সফটওয়্যারের এখানে ডেটা সংরক্ষনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদান করে এবং কাস্টমারদের ডেটা ট্র্যাক করতে পারে, যাতে করে কাস্টোমারদেরকে ভালো সার্ভিস দেয়া যায়। এছাড়াও এর মাধ্যমে কোম্পানির এক ডিপার্টমেন্ট থেকে আরেক ডিপার্টমেন্টের কাজের মধ্যে সমন্বয় ঠিক রাখে।

 

    ব্যবসায় কেন সফটওয়্যার ব্যবহার করা উচিত ?

 

একাউন্টিং সফটওয়্যারের সুবিধা

অফিস, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য এ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যারের সুবিধা অনেক। এই সফটওয়্যারের সুবিধা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলোঃ-

সময় সেভ করে

এটির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সময় সেভ হয়। ম্যানুয়ালি হিসেব করতে অনেক সময়ের দরকার হয়। কিন্তু যখন এ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে কাজ করা হয়, তখন সময় কম লাগে। হিসেবে ভুল হওয়ার থাকে না।

পণ্যের স্টক হিসেব রাখা

সফটওয়্যারের মাধ্যমে কাজ করার ফলে সঠিকভাবে পণ্যের হিসেব রাখা যায়। কোন পণ্যের স্টক কতটুকু আছে বা কতটুকু বিক্রি হয়ে গেছে তা সহজেই জানা যায়।

কর্মচারীদের বেতন

প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের বেতনের হিসেবী ঠিক রাখে। কারন ম্যানুয়ালি হিসেব করলে অনেক ভুল হতে পারে। অন্যদিকে এ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যারের দ্বারা কাজটি করলে ভুল হওয়ার সম্ভবনা থাকে না।

ডেটা সংরক্ষণ পদ্ধতি

যেকোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য ডেটার গুরুত্ব অপরিসীম। কোনো প্রকার ডেটা যাতে নষ্ট না হয়ে যায়, সেজন্য এ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহারকারীরা অনেক নিরাপত্তা পেয়ে থাকে।

নির্ভুল হিসেব করা

অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে ব্যবসার আয় ও ব্যয়ের হিসাব নির্ভুলভাবে করা যায়। আয় ও ব্যয়ের হিসাব ঠিকভাবে করতে পারার কারণে প্রতিষ্ঠানের হিসাব সংক্রান্ত কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না।

আর্থিক হিসাব জানা যায়

এটির মাধ্যমে ব্যবসার আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়। যেমনঃ ব্যবসায় লাভ বা ক্ষতির পরিমান বিষয়ে জানতে পারি।

 

     সবার জন্য ই-কমার্সের গাইড লাইন

সার-সংক্ষেপ

সফটওয়্যারের সুবিধা ও প্রতিষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী এ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার কিনতে পারেন। কারন ছোট প্রতিষ্ঠানের জন্য এক রকমের সফটওয়্যার আবার বড় প্রতিষ্ঠানের জন্য আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী একাউন্টিং সফটওয়্যার নিতে পারেন। উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালচনা করলে দেখা যায় এক সফটওয়্যার ব্যবহারের ফলে সকল ধরনের কাজ করা যায় তাই একাউন্টিং সফটওয়্যার অন্যান্য সফটওয়্যারের চেয়ে সেরা হিসেবে গণ্য হবে।

By tech

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!